সজনে ডাটা ও পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা ও গুনাগুন:-
সজনে ডাটা সাধারণত সবজি হিসেবে খাওয়া হয় এবং পাতা শাক হিসেবে খাওয়া হয়। এর পাতা কে বহুগুণ সম্পন্ন পাতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কারণ এটি পৃথিবীর সবথেকে বেশি পুষ্টিকর। সজনে পাতার উপকারের কথা বলে শেষ করা যায় না। বিভিন্ন রকম প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিড সহ শতকরা ৩৮ ভাগ আমিষ আছে। যা পৃথিবীর বহু উদ্ভিদে পাওয়া যায় না। প্রায় 200 থেকে 300 রকমের অসুখের চিকিৎসা হয় এই উদ্ভিদ থেকে।
গুনাগুন ও স্বাস্থ্য উপকারিতা:-
- শরীরের হজম ক্ষমতা, বৃদ্ধি করে এবং পুষ্টি বড্ডক হিসেবেও কাজ করে থাকে।
- আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়ায়।
- যকৃত ও কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- প্রায় ৯০ টেরও বেশি এবং ৪৬ রকমের এন্টিঅক্সিডেন্ট সজনে বিদ্যমান আছে।
- এর পাতায় প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়।
- সজনের পাতায় যে এন্টি অক্সিজেন পাওয়া যায় তা ক্যান্সার রোগ সৃষ্টিতে বাধা প্রদান করে।
- সজনে পাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
সজনে ও পাতায় প্রচুর আশ থাকে বলে খাদ্যনালী ও অন্তরের পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার করে। অর্থাৎ যে তৈলাক্ত অনেক খাব আর আমরা খায় তা রক্তনালীতে আটকে থাকে , সেগুলো বের করে আনতে সাহায্য করে।
- ইহা শরীরে কোলেস্ট্রলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
- সজনে গ্যাস্ট্রিক আলসার এবং গ্যাস্ট্রিক জনিত ক্যান্সার ঠেকাতে সহায়তা করে।
- সজনের দানা জল বিশুদ্ধকরণের জন্য সবথেকে ভালো প্রাকৃতিক উপায় বলা যেতে পারে।
- সজনে পাতা গুড়ো করে এক চামচ করে তিন মাস খেলে ডায়াবেটিস সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
- মায়েদের প্রতিদিনের আয়রন ও ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে থাকে
- এইডস আক্রান্ত কোন রোগে যদি এর সজনে ও পাতা খাওয়ার অভ্যাস করে তাহলে তার ইমিউনিটি অনেকটাই বৃদ্ধি পায়।
ডায়রিয়া কলেরা আমাশয় কোলাইটিস এবং জন্ডিসের ব্যাপক উপকারী সজনে পাতা তাছাড়া পাতার রস আরো বেশি উপকারী।
সজনে তেল:-
এই গাছের শুকনো বীজ যে বস্তুতের পাওয়া যায় তা বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ। করে তাছাড়া তেল নিষ্কাশনের পর যে খোল পাওয়া যায় তা সার হিসেবে এবং শোধনের কাজেও ব্যবহার করা হয়। এই তেলের গন্ধ নেই তাই বজ্র তেলের মতই মানসম্পন্ন।
রূপচর্চায়:-
ত্বকের বলিরেখা এবং ত্বকের ক্ষত সব পাতার গুঁড়ো দূর করতে সাহায্য করে। ঠোঁটের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে সজনে তেল। এইটেল ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য টক্সিন দূর করে। সজনের গুঁড়ো চুল মজবুত করতে সাহায্য খুশকি এবং স্কাল্পের শুখবাব দূর করে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদানের কারণে। ত্বকে কলিজেন প্রোটিন উৎপাদনের সাহায্য করে যা তকে ছিদ্র বন্ধ করে।
ওষধি গুনাগুন:-
সজনে এর বাকল শিকল ফুল ফল পাতা বীজ এমনকি আঠাতেও ঔষধি গুন আছে। যেমন:
শরীর ব্যথা:-
যদি শরীরের কোন জায়গায় ব্যাথা হয় বা ভুলে যায় তাহলে শিকড়ের প্রলেপ দিলে ব্যথা ও ফোলা দ্রুত সেরে যায়।
কান ব্যথা:-
সজনের শিকড়ের রস কান ব্যথা সারতে সাহায্য করে।
গ্যাস থেকে রক্ষা:-
পাতার রসের সঙ্গে লবণ মিশিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ালে পেটে জমা গ্যাস দূর হয়ে যায়।
বহুমূত্র রোগ:-
পাতার রস খেলে বহুমূত্র রোগ সেরে যায়।
কাম শক্তি বৃদ্ধি:-
এর ফুল এবং দুধ একসাথে রান্না করে নিয়মিত খেলে কাম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
মাথা ধরা:-
মাইগ্রেন শ্বাসকষ্ট এবং চুল পড়া রোগের চিকিৎসায় ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:-
শরীর থেকে বিষাক্ত দ্রব্য ভারী ধাতু অপসারণ করে এবং শরীরের রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি নিতে সাহায্য করে থাকে।
সাবধানতা:
বীজ মাছ এবং এর জন্য কখনো কখনো বিষাক্ত হতে পারে এই কারণে সকলের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। তাছাড়া সজনের যে মূল তাও অনেক সময় বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে। যার কারনে আমাদের স্নাওকে অবশ করে দিতে সাহায্য করে। তাই আমাদের সকলের উচিত খাওয়ার ক্ষেত্রে সব সময় এটি বর্জন করা।
পরিশেষে বলা যায় সজনে ও পাতা উপকারিতা কোন শেষ নেই সামান্য ত্রুটি থাকলেও সজনে ও সজনে পাতা আমাদের প্রত্যেকেরই খাওয়া উচিত তাহলে আমরা সুস্থ সবল এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারব।