নিম এর উপকারিতা ও ব্যবহার

নিম

গ্রাম অঞ্চল অথবা রাস্তাঘাটির আশেপাশে এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়।নিম একটি গাছ যার বৈজ্ঞানিক নাম হল Azandirachta Indica । এই গাছ ভারতের মতো উষ্ণ এবং নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে প্রচুর দেখতে পাওয়া যায়।

দৈনন্দিন জীবনে মানুষ কমবেশি নিম গাছের ব্যবহার করে থাকে। এই নিম গাছ ঔষধি গাছ নামাও বেশ পরিচিত। ঠিক আছে ডাল পাতা রস বাকোল প্রাথমিক জীবনে কমবেশি সকলেরই কোন না কোন কাজে লেগেই থাকে। নেমে এমন এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ আছে যা রক্তে শর্করার পরিমাণ সঠিকভাবে বজায় রাখতে অনেক বেশি সহযোগিতা করে। পরিপাকতন্ত্রের অনেক সমস্যারও সমাধান করে থাকে এই পাতার রস। আলসার নিরাময় করতে সহযোগিতা করে। ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সহযোগিতা করে। P মুখের দুর্গন্ধ অথবা দাঁতের সমস্যার সমাধান করে এমনকি গর্ব অবস্থায় রোধ করতে পারে।

সারা বিশ্বজুড়ে নিম গাছ এবং এই গাছের পাতা নিমের ফল ও বাকল বিভিন্ন রকম কাঁচামাল হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন অ্যান্টিসেপটি এ নিমের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।  ছত্রাকনাশক ভাইরাস থেকে মুক্ত করে এবং কীটপতঙ্গ এবং ব্যাকটেরিয়া ম্যালেরিয়া ও দাঁতের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে নিমের এই নির্যাস বিভিন্ন ব্যথা থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে। বাতের ব্যথার ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

নিমের ব্যবহার ও উপকারিতা :- 

দাতের রোগ :- 

এই পাতার নির্যাস যুক্ত জেল দাতে লাগালে ভালো উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া নিমের মাউথওয়াশ ব্যবহারের দাঁতের প্লাকের পরিমাণ কমে যায়।

নিমের পাতা ও ছালের গুঁড়ো কিংবা নিমের ছাল দিয়ে প্রতিদিন দাঁত মাজলে দাঁতের গোড়া মজবুত হয়।

উকুন:- 

নিমের নির্যাস শ্যাম্পুর সাথে মিশিয়ে মাথার ত্বকে ব্যবহার করলে মাথার উকুন কমানো যায়। এছাড়া নিমের তৈরি পেস্ট মাথায় ভালো করে লাগিয়ে মাসাজ করলে এবং চুল শুকিয়ে যাওয়ার পর চিরুনি দিয়ে ভালো করে মাথা আছালে মৃত উকুন বাইরে বেরিয়ে যায়।

সপ্তাহে দুবার করে অন্তত তিন মাস একটানা ব্যবহার করলে দারুন ফল পাওয়া যায়।

ব্রণ:- 

ব্রনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে  একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।  ব্রণের চিকিৎসায় দাগ কমাতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বকে ভিতর থেকে আরো বেশি উন্নত রাখতে নিমের নির্যাস খুব উপকার করে। এছাড়া নিজের তেল তৈরি হয় তা ব্রণের পক্ষে খুব দারুণ ভূমিকা রাখে।

চুল :- 

শক্ত মজবুত ও ঘন চুলের জন্য এই পাতার অবদান অনেক। চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য নিমের বীজে  নির্যাসে থাকা অ্যাজাডিরাকটিন খুব ভালোভাবে প্রভাবিত করে। চুলে থাকা পরজীবীদের থেকে উন্মুক্ত করতে সাহায্য করে। চুলের বৃদ্ধিতে খুব ভালোভাবে কাজে লাগে। মাথার খুশকি কমাতে সহায়তা করে।

সপ্তাহে অন্তত দুদিন নিমপাতা বাটা শ্যাম্পু সাথে মিশিয়ে অথবা নিম যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহারে চুলের বাহ্যিক উজ্জ্বলতা  বৃদ্ধি পায়।

লিভার ও কিডনি :- 

লিভার ও কিডনির স্বাস্থ্য ঠিকঠাক ভাবে বজায় রাখতে নিমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নিমের এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটারি গুলো অক্সিডডেটিভ স্ট্রেস এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

ত্বক:- 

ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো ও পরিষ্কার রাখতে নিমের বীজের তৈরি অলীক পমিমিটি এবং লিনোলিক এসিড দারুণ সাহায্য করে। মুখের দাগ ও ব্রণ দূর করতে এছাড়া  ত্বকের মশ্চারাইজার হিসেবে নিম্নের তৈরি নির্যাস দারুন কাজ করে। নিমের পাতা ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস বিরোধী হওয়ায় ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস থেকে সহজে রেহাই পাওয়া যায়।

আলসারও ক্ষত নিরাময়:- 

প্রাণীদের গবেষণায় দেখা গেছে যে নিমপাতার নির্যাস বর্ধিত প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া ও নতুন রক্তনালী গঠনের মাধ্যমে কত নিরাময়কে সাহায্য করে।

রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ:- 

নিম সুগার নিয়ন্ত্রণ বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খুব দারুণভাবে কাজ করে। নিম পাতা বাটা অথবা ভাজা অথবা নিমপাতার রস রক্তের সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে। মিমের কচি পাতা বাটা রস প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। যা সহজে ডায়াবেটিস রোধ করতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে:- 

ওজন কমাতে নিম ফুল মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে এবং শরীরের চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে। কিছু নিম ফুল ভালো করে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিয়ে এক চামচ মধু এবং আধা চামচ লেবুর রসের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে খেলে ওজন সহজে কমে।

পোকামাকড়ো কীট পতঙ্গের কামড়:- 

পোকামাকড় বা কীটপতঙ্গের দমন করার ক্ষেত্রে নিম পাতার ছাল অথবা নিম পাতা বাটা ক্ষতস্থানে লাগালে ক্ষতস্থান সহজেই শুকিয়ে যায় এবং ব্যথা উপশম হয়।

 নিম গাছের যে যে অংশ কাজে লাগে:- 

নিম গাছ খুবই উপকারী ঔষধি জাতীয় গাছ। আর এই নিম গাছের পাতা থেকে শুরু করে শিকড় বাকর ফল ফুল সবই উপকারী এবং শরীর সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে দারুন ভূমিকা রাখে।

পাতা:-

নিম গাছের পাতা দারুন উপকারি। প্রাচীন কাল থেকে নিম পাতার ব্যবহার দারুন ভূমিকা রেখে আসছে। প্রাচীনকালে আয়ুর্বেদ চিকিৎসার ক্ষেত্রে নিম পাতা অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে গবেষিত হতো। নিম পাতার অনেক গুণ রয়েছে। নিম পাতার তৈরি অ্যান্টিসেপ্টিকো এন্টিবায়োটিক বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ও ত্বকের সমস্যার দূর করতে কাজে লাগে। এছাড়া নিমপাতা বাটা অথবা নিমপাতা নির্যাস বা রস খালি পেটে খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে থাকে।

নিম তেল :- 

নিম পাতার মতো নিম তেলও খুব ভালো কাজে লাগে। শরীরের কোন স্থান জ্বলে গেলে অথবা পুড়ে গেলে সেই স্থানের নিম তেল লাগালে খুব সহজে চামড়ার প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ হয়। এছাড়া গর্ভনিরোধক হিসেবেও নিমতেল ব্যবহার করা হয়।

নিমের দাতন:- 

দাঁতের জন্য নিমের ডাল খুব উপকারী। দাঁতের গোড়া মজবুত করতে এবং দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে নিমের ডাল খুব দারুণ ভূমিকা রাখে। অশোক এবং সংক্রমণ থেকে দূরে রাখে। মারি শক্ত ও মজবুত রাখে।

 

 

 

 

 

Leave a Reply

%d bloggers like this: