কেন হয় এই মাথা ঘোরা ? কি এই মাথা ঘোরার লক্ষণ? কিভাবে মিলবে এর প্রতিকার…

কেন হয় এই মাথা ঘোরা ? কি এই মাথা ঘোরার লক্ষণ? কিভাবে মিলবে এর প্রতিকার…

মাথা ঘোরার শব্দটি অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি শব্দ। যা সাধারণত মাথা ঘোরা অসস্তি দুর্বলতা বোধ করা বমি বমি ভাব বোধ করাকে বোঝানো হয়। মাথা ঘুরলে যখন মনে হয় যে আশেপাশের সবকিছুই ঘুরছে অথবা নড়াচড়া করছে তখন সেই অবস্থাকে বলা হয় ভার্টিগো।

প্রাপ্তবয়স্ক থেকে মধ্যবয়স্ক সকলেই প্রায় কম বেশি মাথা ঘোরার কারণে অসস্তিতে পড়েন এবং ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।

বেশিরভাগ ব্যক্তি মাথা বনবন করে ঘোরা অথবা ক্রমাগত মাথা ঘোরার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। তবে সব মাথা ঘোরা কে হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয়। কখনো এই মাথা ঘোরা বরফ কোন রোগের আশঙ্কার চিহ্নমাত্র হয়ে থাকে।

মাথা ঘোরার লক্ষণগুলো:-

মাথা ঘোরার লক্ষণ অন্যান্য অনেক রোগের সংকেত স্বরূপ হতে পারে। মাথা ঘোরার অনুভূতি হলে :-

  • হালকা মাথাব্যথা
  • মাথা ঘোরা ,
  • অস্থিরতা ,
  • ভারসাম্যহীনতা ,
  • ,অলসতা
  • জ্ঞান হারানো অথবা অজ্ঞান বোধ করা।

যখন কোন ব্যক্তি হাঁটার চলার সময় অথবা দাঁড়িয়ে থাকার সময় মাথা ঘোরা অনুভূতি অনুভব করতে পারে তখন সেই মাথা ঘোরার তার পক্ষে খারাপও হতে পারে। অনেক সময় এই মাথা ঘোরার সাথে সাথে বমি বমি ভাব সহ বমিও হতে পারে। এই সেগুলো এতটাই আকস্মিক এবং তীব্র হতে পারে যে হয়ে বা বসে থাকা খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। মাথা ঘোরা কমপক্ষে একদিন অথবা তার বেশিও স্থায়ী হতে পারে। মাথা ঘোরা দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে অতি দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া একান্ত প্রয়োজন।

ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে যখন মাথা ঘোরা অসহনীয় মাত্রার রূপ ধারণ করে । যেমন :-

  • হঠাৎ করেই মাথাব্যথা শুরু হলে
  • শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হলে
  • হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভূত হলে
  • চোখে ঘোলা ঘোলা দেখলে
  • হাত-পা অসার হয়ে গেলে
  • স্পন্দনের গতি হঠাৎ কমে গেলে অথবা হঠাৎ বেড়ে গেলে
  • হাঁটতে চলতে অসুবিধা সৃষ্টি হলে
  • হঠাৎ বমি বমি ভাব অথবা চলমান অবস্থায় বমি পেলে
  • শরীরে খিচুনি দেখা দিলে
  • কথা বলতে কষ্ট হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

মাথা ঘুরার পেছনে যেসব কারণগুলো কাজ করে:-

অভ্যন্তরীণ কানের সমস্যার ফলে মাথা ঘুরতে পারে:-

কানের ভেতরে সোনার ব্যাঘাত ঘটলে অথবা অসুস্থতা বোধ করলে অথবা ওষুধের প্রভাবে মাথা ঘোরা হয়ে থাকে। কোন কখনো মাথা ঘোরা অভ্যন্তরীণ অসুস্থতার কারণে হয়ে থাকে। যেমন বড় কোনরকম মাথায় আঘাতের ফলে অথবা জ্বর ঠান্ডা দুর্বলতা প্রভৃতি কারণে মাথা ঘুরতে পারে।

তবে কখনো কখনো এই মাথা ব্যথা কোন কারন ছাড়াই হয়ে থাকে এবং বড় কোন সম্ভাব্য রোগের সংকেত দেয়। মাথা ঘোরা কতক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং এর উপসর্গ বলে কতটা বেদনা দায়ক তার ওপর নির্ভর করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

কখনো কখনো কানের ভেতরে সমস্যা মাথা ঘোরার সৃষ্টি করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:-

শরীরের ভারসাম্য এবং বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি সংবেদনশীল সিস্টেমের মাধ্যমে ইনপুট এ সংকেত প্রদান করে।

চোখ:-

চোখ এমন একটি সংবেদনশীল অংশ যা ব্যক্তিকে বুঝতে সাহায্য করে যে শরীর কথায় আছে। অথবা চোখের সামনে কি কি আছে। এবং সেটি কিভাবে চলছে।

স্নায়ু:-

আমাদের শরীরে যে সংবেদনশীল স্নায়ু বিদ্যমান থাকে সেই স্নায়ু গুলি শরীর কেমন ভাবে নড়াচড়া করছে এবং শরীরের কোথায় কি সমস্যা হচ্ছে সেই সম্পর্কে মস্তিষ্কে তথ্য প্রেরণ করে।

কান :-

কানে এমন এক ধরনের সংবেদনশীলতা রয়েছে যার মাধ্যমে মধ্যাকর্ষণ এবং আশেপাশের গতি অথবা নিজস্ব গতি সনাক্ত করতে সহায়তা করে।

*****ভার্টিগো:-

ভার্টিগো হল এমন এক ধরনের মিথ্যে অনুভূতি যার দ্বারা দেখতে মনে হতে পারে যে তার আশেপাশের সমস্ত কিছু ঘুরছে অথবা নড়ছে। কানের যে সমস্ত রোগ বা ব্যাধি হয়ে থাকে তার সংকেত গুলি নাইুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রেরণ করে যা চোখ এবং সংবেদনশীল স্নায় ু প্রেরণ করছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এর ফলে মস্তিষ্কে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয় সেই বিভ্রান্তি দূর করার জন্য কাজ করার ফলে ভার্টিগো হয়ে থাকে বা হয় ।

বিনাইন প্যারক্সিসামাল পজিশনাল ভার্টিগো ( BPPV) :-

এই অবস্থায় কোন ব্যক্তির তীব্র অথবা হালকা অনুভূতি সৃষ্টি হতে পারে যে ব্যাক্তি চারপাশে ঘুরছেন অথবা নড়াচড়া করছেন। এবং এই সময় মাথার দ্রুত পরিবর্তনের দ্বারা ট্রিগার হয়ে থাকে যেমন উঠলে অথবা বসলে মাথায় আঘাত অনুভূত হয়। BPPV হলো ভার্টিগোর হচ্ছে সাধারণ লক্ষণ বা কারণ।

সংক্রমণ:-

এই সংক্রমণ ভেস্টিবুলার স্নায়ুর একটি ভাইরাল সংক্রমণ যাকে ফেস্টিভেলার নিউ রাইটিস বলা হয় যার ফলে তীব্র অনবরত ভার্টিগো হতে পারে। কোন ব্যক্তির হঠাৎ করে শ্রবণশক্তি কমে গেলে সেই ব্যক্তির গোলক ধাঁধা মত কিছু অনুভূত হতে পারে।

মেনিয়ারের রোগ:-

এই লোকটি কানের ভেতরে অতিরিক্ত তরল জমা হওয়ার ফলে সৃষ্টি হতে পারে। এটি কয়েক ঘণ্টার মতো দীর্ঘস্থায়ী ভার্টিকোর আকর্ষিক পর্ব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই সময় উঠানাবার সময় কানেক্ট শ্রবণ শক্তি হ্রাস পায় কানে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর মতো আওয়াজ অনুভূত হয়।

মাইগ্রেন:-

কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেসব ব্যক্তি মাইগ্রন অনুভব করে তাদের মাথাব্যথা না থাকলেও মাথা ঘোরা বা অন্যান্য ধরনের মাথার সমস্যা হতে পারে। যদি এই ভাটিগর পর্ব কয়েক মিনিট বেশি দীর্ঘস্থায়ী বা কয়েক ঘন্টা দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে মাথা ব্যথার পাশাপাশি আলো এবং শব্দ সংবেদনশীলতার সাথে যুক্ত হতে পারে।

মাথা ঘোরা হলে কি কি করণীয়:

মাথা ঘুরার ক্ষেত্রে অনেক সময় অনেকেই ঘরোয়া পদ্ধতির ব্যবহার করে থাকে।

সংবেদনশীল অংশ হিসেবে যেমন কানের সমস্যা গুলির ক্ষেত্রে ওষুধ ব্যবহার করা হয়ে থেকে এবং বাড়িতে ব্যায়ামের দ্বারা শরীরের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

খাদ্য খাবারের দিক থেকে কম লবণযুক্ত খাবার স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভালো। খাবারে কাঁচা লবনের ব্যবহার না করা অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর।

দীর্ঘ সময় ধরে মাথা ঘোরার অভ্যাস থেকে থাকলে নিয়মিত ব্যায়াম ও প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় পদার্থ পান করার ফলে শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে।

ভহল এমন এক ধরনের মিথ্যে অনুভূতি যার দ্বারা ব্যক্তির মনে হতে পারে যে তার আশেপাশে সবকিছু নড়ছে বা ঘুরছে

হঠাৎ করে মাথা ঘোরা শুরু হলে করণীয়:-

  • মাথা ঘোরা হঠাৎ শুরু হলে আশেপাশে তাকাচ্ছি আরে অথবা খাটে শুয়ে পড়ুন আর যদি আশেপাশে খাট অথবা চেয়ার না থাকে তাহলে মেঝেতে বসে পড়তে হবে। শরীরের ভারসাম্য রক্ষা পাবে এবং যাতে ভারসাম্য হারানোর ফলে পড়ে গিয়ে হাতে পায়ে ব্যথা না লাগে।
  • কারোর যদি হঠাৎ হঠাৎ মাথা ঘোরার সমস্যা থেকে থাকে তাহলে বেত বা ওয়াকার ব্যবহার করা উচিত
  • সিঁড়ি দিয়ে ওঠা চলা করার সময় অবশ্যই সাথে করে হাইড্রাইল ব্যবহার করা উচিত।
  • অনুভূতি হলে গাড়ি চালালে দুর্ঘটনার কমলে করতে পারে তাই মাথা ঘুরলে গাড়ি চালানোর থেকে বিরত থাকা উচিত
  • মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত
  • মোট বিড়ি সিগারেট তামাক জাতীয় দ্রুত সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে
  • প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে তিন লিটার পরিমাণ জল কমপক্ষে খেতেই হবে।।
  • সুস্থ কর খাবার খেতে হবে বিশেষ করে সবুজ শাকসবজি ফলমূল প্রাত্যহিক খাবারের তালিকায় রাখতে হবে
  • বেশি মাথাব্যথা করলে প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করা দরকার
  • অতিরিক্ত সমস্যা হলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা একান্ত দরকার

Leave a Reply

%d bloggers like this: